অরণ্য, ঝাড়গ্রাম - ৯ ফেব্রুয়ারি :
দূর্নীতির কোনো শেষ নেই । সরকারী কাজ আর দূর্নীতি হবে না এমন নিদর্শন সম্প্রীতিকালে নেই বললেই চলে। এবার জলট্যাঙ্ক নির্মানে । শাসকদলের নেতাদের কাটমানি ও ঠিকাদার সংস্থার নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠছে ঝাড়গ্রাম জেলায়। নিম্নমানের কাজের অভিযোগ জানিয়ে জল ট্যাঙ্ক নির্মাণকাজ আটকে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের রোহিনী গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনাখুলি গ্রামের। এখানে পানীয় জল সরবরাহের জন্য একটি উঁচু জলের ট্যাঙ্ক নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ট্যাঙ্কটি একটি নিচু জমির নরম মাটিতে তৈরি হচ্ছিল। ফলে ট্যাঙ্কটি তৈরি হলে যে কোনও সময় ভিত বসে গিয়ে ভেঙে পড়বে। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, গ্রামে অনেকেই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন, তাঁরা এই নির্মাণকাজ দেখে আপত্তি জানান। এরপর সবাই মিলে আপাতত কাজ আটকে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, নরম মাটিতে যে ভাবে ইট বসিয়ে কাজ সেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে তা ভয়ঙ্কর। ট্যাঙ্ক এবং অতহাজার লিটার জলের চাপ নিতে পারবে না। যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে।যা গত কয়েকবছর আগে বাঁকুড়ায় ঘটেছিলো। নবনির্মিত আস্ত জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ে যায়।গ্রামবাসী দের দাবি এভাবে সরকারের টাকা নয়ছয় করতে দেওয়া যাবেনা। নরম মাটি সরিয়ে শক্ত মাটি দিয়ে কাজ চালু করতে হবে।রোহিনী মন্ডল বিজেপির সভাপতি অঞ্জন জানা গ্রামবাসীদের সঙ্গে আন্দোলনে নেমেছেন। বিজেপির দাবি, গ্রামের লোকজনদের অন্ধকারে রেখে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণকাজ চলছিল। তাই গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ করেছে।
বিজেপির আরও দাবি, এই জল প্রকল্পের জন্য দুজন কর্মচারী নিয়োগ হয়েছে, কিন্তু ওই দুজনই বাইরের লোক। বিজেপির সরাসরি অভিযোগ তৃণমূল টাকা নিয়ে লোক নিয়োগ করেছে, ফলে স্থানীয়দের কাজ হয়নি।অপরদিকে তৃণমূলের রোহিনী অঞ্চল সভাপতি মথুর মাহাত র দাবি, লোক নিয়োগ করে প্রশাসন। বিজেপি কর্মসংস্থান নিয়ে রাজনীতি করছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ঝুনু বেরা অবশ্য এই কাজ বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারটা জানেন না। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেব।একই দাবি বিডিও-র। রোহিনী গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনাখুলি গ্রামে যে ট্যাঙ্ক নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছে গ্রামবাসীরা সেই খবর জানেন না বিডিও। সাঁকরাইলের বিডিও রোহন ঘোষ সংবাদমাধ্যম থেকেই এই বিষয়ে জানতে পারেন। তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান। সামনেই লোকসভা ভোট। তার আগে জলের ট্যাঙ্ক নির্মাণে বেনিয়ম ও স্থানীয় লোকের চাকরির দাবিতে গ্রামবাসীদের এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ যথেষ্টই চাপে রাখছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে।