কালী মায়ে সাত কাহন

 নিজস্বসাংবাদদাতা --১২ নভেম্বর:

নৈহাটির বড়মা এবার শিলিগুড়িতে

শিলিগুড়ি--- নৈহাটির বড়মা এবার শিলিগুড়িতে,উদ্বোধন হলো শিলিগুড়ি হায়দার পাড়া মহামায়া স্পোর্টিং ক্লাবের শ্যামাপূজার। উদ্বোধন করলেন শিলিগুড়ি মেয়র গৌতম দেব। 

জানা যায় এ বছর এই ক্লাবের ৪৪ তম বর্ষে তাদের থিম সবার বড়মা। নৈহাটির বড়মার মূর্তির আদলে এখানেও ২৫ ফুট উঁচু ও ২০ ফুট চওড়া বড়মার মূর্তি তৈরি করা হয়। পুজোর বাজেট রয়েছে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা।

হাওড়ায় দক্ষিণ ব্যাঁটরার বড় কালী'র খ্যাতি রয়েছে 'বড় মা'র পুজো হিসেবেই। হাওড়ার ৯১ বছরের প্রাচীন এই পুজোয় প্রাণীবধ ও রুধির কর্দ্দম অর্চনা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। দেশের স্বাধীনতা লাভেরও বহু বছর পূর্বে ১৯৩২ সালে এই পুজোর প্রথম সূচনা হয়েছিল। যার প্রসিদ্ধি "বড় কালী" বা "বড় মা" হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। মধ্য হাওড়ার বুকে দক্ষিণ ব্যাঁটরা শ্যামাপূজা ক্লাবের পুজো দূর দূরান্তের মানুষের কাছে বড় কালী বা বড় মায়ের পূজো বলেই খ্যাত। দেশপ্রাণ শাসমল রোড, ক্ষীরেরতলার ( ক্ষীরোদতলা ) কাছে এই ক্লাব শুধু পুজোর আয়োজন করাই নয়, বছরের বিভিন্ন সময় খেলাধূলা থেকে শুরু করে সামাজিক দায়বদ্ধতা মাথায় রেখে সমাজ কল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত থাকেন। এ

ছর এই ক্লাবের ৯১তম বছরের শ্যামাপুজো। ক্লাবের তরফে ডাঃ নিতাই ব্যানার্জি ( ডা: এন ব্যানার্জি), সুজয় রায় সহ অন্যান্য সংঘের সদস্যরা জানান, এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো শ্যামা মায়ের পূজা এবং আরাধনা। বড়ো কালী মা দুষ্টের দমন এবং সৃষ্টের পালনের প্রতিমূর্তি। চতুর্ভূজা, এলোকেশী, মুন্ডমালিনী, শায়িত।

মহাদেবের বুকের উপরে মা দাঁড়িয়ে আছেন। দেবী প্রতিমার উচ্চতা প্রায় ১৭ ফুট এবং দেবাদিদেব মহাদেবের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ ফুট। শ্যামা মা প্রত্যেকেরই আকাঙ্ক্ষিত কামনা পূর্ণ করেন। এখানে মায়ের সমস্ত অঙ্গ সোনা এবং রূপায় আবৃত। মায়ের আশীর্বাদে প্রত্যেকেই তাদের মনস্কামনার পূর্ণতা প্রাপ্তির ফলস্বরূপ শ্যামা মায়ের এবং বাবা মহাদেবের গয়না পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রদান করে থাকেন। সংঘের সকল সদস্যগণের এবং সরকারি প্রশাসনিক সহায়তায় শ্যামা মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বড় মায়ের পূজার সমস্ত কার্য হিন্দু শাস্ত্রীয় পদ্ধতি অনুসারে পালিত হয়। 

 জয়নগরের ময়দায় আজও ভক্তদের ভীড় পাতাল ভেদী মা কালীর দর্শন পেতে। প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগে পাতাল ভেদ করে উঠেছিলেন দেবী। সেই থেকে জয়নগরের ময়দায় পুজিত হয়ে আসছেন পাতালভেদি দক্ষিণা কালী। কালীপুজোর রাতে দেবীর পুজো ঘিরে ময়দা কালীবাড়িতে ঢল নামে হাজার মানুষের। এই কালী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরী। কথিত আছে, সে সময়ে জঙ্গলে ঢাকা এই পথ দিয়ে জলপথে বাণিজ্য করতে যেতেন রাজা। তখনই এক দিন এই এলাকায় নদীর ধারে একটি বকুল গাছের ডালে এক বালিকা কে দোল খেতে দেখেন। ঘন জঙ্গলে এ ভাবে এক বালিকাকে দেখে আশ্চর্য হন তিনি। পর পর কয়েক দিন এই দৃশ্য দেখার পরে নৌকো থেকে নেমে বালিকার খোঁজ শুরু করেন তিনি। কিন্তু কোথাও খোঁজ মেলে না। রাজা স্বপ্নাদেশ পান, ওই বকুল গাছের কাছেই মাটির নীচে রয়েছেন দেবী দক্ষিণাকালী। নির্দিষ্ট সময়ে তিনি। পাতাল ভেদ করে উঠবেন। রাজাকে তাঁর পুজোর ব্যবস্থা করতে হবে। রাজা ওই জায়গায় আসেন। 

খোঁজ করে এক জায়গায় মাটির নিচে একটি শিলা খুঁজে পান তিনি। সেই শিলাকে কেন্দ্র করেই মন্দির তৈরি হয়। শুরু হয় শিলারূপী দেবীর পাতালভেদের অপেক্ষা। অনেকে বলেন, “শিলাকে তোলার চেষ্টা করেছিলেন রাজা। এমনকী, হাতি দিয়ে টেনে তোলার চেষ্টা পর্যন্ত হয়ে ছিল। কিন্তু ফল হয়নি। নির্দিষ্ট সময়ে নিজে থেকেই মাটি ভেদ করে উপরে উঠে আসে শিলা। সেই শিলাই দেবীরূপে পুজো হয়। অনেকে বলেন,অতীতে ময়দা দানব এই দেবীর পুজো করতেন। সেই থেকেই এই এলাকার নাম হয় ময়দা। রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরীর দেখা সেই বকুল গাছ এখনও রয়েছে। মন্দিরের এক প্রান্তে। স্থানীয় মানুষজন জানান, এই গাছে কখনও ফল হয় না। শুধু ফুল হয়। রাজা সাবর্ণ রায়চৌধুরীর প্রতিষ্ঠা করার পর থেকেই, ময়দায় নিয়ম করে পূজিত হয়ে আসছেন দেবী দক্ষিণাকালী।  

আজ থেকে প্রায় ৮০০ বছর আগেকার ঘটনা তখন হুগলি জেলার পান্ডুয়ার সিমলাগড়ের এলাকা চারিদিকে জঙ্গল ছিল জনবসতি খুব কম ছিল। সেখানে তখন ভট্টাচার্য বাড়িতে মা কালীর পূজা হতো একদিন রাতে মা কালী ভট্টাচার্য পরিবারে স্বপ্নাদেশ দিলেন আমি এখানে আর থাকতে পারছি না তোরা আমাকে শ্মশানে রেখে আয় সেই স্বপ্নাদেশ  পেয়ে ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যরা মা কালীকে শ্মশানে রেখে আসেন। এবং সেখানে হোগলা তাল পাতা দিয়ে একটি মন্দির মত করে দেন এরকম অনেক গল্প কথা শোনা যায় । আরও জানা গেল সেই সময় সিমলাগড় এলাকায় ডাকাতদের ঘাটি ছিল রঘু ডাকাত বিশে ডাকাত সেখানে রাজ করত তারপর থেকে ভট্টাচার্য পরিবারের লোকেরা সেই সময় শ্মশানে গিয়ে মায়ের পুজো দিত সকালে বিকালে তারা ভয় ভয়ে কোনরকম পুজো দিয়ে আসতো ভট্টাচার্য পরিবারের এক সেবাইত রোজ পুজো দিতেন। সেই সময় ডাকাতরা নরবলি দিত বলে শোনা যায় । একদিন ভট্টাচার্য পরিবারের এক সদস্য ছিলেন টোল পন্ডিত তিনি পুজো দিয়ে টোলে যেতেন  তা একদিন তিনি সকালে পুজো দিতে গিয়ে দেখেন একটি মুন্ডু কাটা মানুষ পড়ে আছে তিনি ভয় পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে চলে আসেন। এবং ফাঁকা মাঠ দিয়ে যাওয়ার সময় স্বয়ং মা কালী তার সামনে এসে বলেন তুই আমার পুজো দিতে যা আজ থেকে এখানে নরবলি বন্ধ। মন্দিরে যারাই থাকুক কেউ তোদের ক্ষতি করতে পারবে না।  রোজ দুবেলা পুজো দিবি তারপর তিনি আবার মাঝ রাস্তা থেকে ফিরে মন্দিরে পুজো দিলেন মানে শ্মশানের সেই অস্থায়ী মন্দিরে পূজো দিলেন। ভট্টাচার্য পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে তারপর থেকে আজ পর্যন্ত মায়ের পুজো চলছে। এক সময় এখানে উত্তমকুমার ,সত্যজিৎ রায়, সন্ধ্যা রায় এখানে এসে পুজো দিতেন ও অনেক অনেক নেতা মন্ত্রী খেলোয়ার চিত্র তারকারা পূজো দিতে আসেন তাই নয় যারা নতুন গাড়ি কেনেন বাইরের রাজ্য থেকে এখানে সেই নতুন গাড়ি নিয়ে মায়ের কাছে পুজো দিয়ে যান। 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.